দিরিলিস আরতুগ্রুল সিরিজে দেখানো আফসিন বে নামক এক রহস্যজনক চরিত্র তুরগুত টুনসাল্প

দিরিলিস বাংলাঃ আফশিন ইবিনে বাকজি বে একটি তুর্কি সুন্নি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । ১১শ শতকে সেলজুক সাম্রাজ্যের একজন খোরাসানি তুর্কোমান সেনাপতি ছিলেন। তিনি একাদারে তিনজন সুলতানের হয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাজে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, প্রথমে চাঘরি বেগ (আবু সুলেইমান দাউদ চাগরি ইবনে মিকাইল) পরে আল্প আরসালান ও শেষে ১ম মালিক শাহ  এর অধীনে কাজ করেন। এরপর  ১০৭৭ খ্রিস্টাব্দ এর পর তিনি অদৃশ্য হয়ে যান বলে ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়। 

দিরিলিস আরতুগ্রুল সিরিজে দেখানো আফসিন বে নামক এক রহস্যজনক চরিত্র

জীবনীঃ নবযৌবনপ্রাপ্ত কিশোর আফশিন ১০১৬ সালে চাঘরি বিন মিকাইল বিন সালজুকের চাকরিতে যোগ দিয়ে তার এক অভিযানে তাকে সহযোগীতা করেন। ১০৬৪ সালে তাকে বাইজেন্টিয়ানে  সেলজুকে প্রবেশের জন্য দায়ীত্ব পান এবং  তিনি অনেক শহর জয় করেন যা আজও তুরস্কে রয়ে গেছে। তার দুর্দান্ত কৃতিত্বের কারণে তিনি বাইজেন্টাইনদের এক তিক্ত শত্রু হয়ে উঠেছিলেন এবং এর কারণে হোশিনের কাছে বন্দী হওয়ার পরে মুক্তিপণের বিনিময়ে তিন মুক্তি পান।
 
তিনি মালাতিয়ায় বাইজেন্টাইনদের পরাজিত করার জন্য দানিশমন্দ রাজবংশের আমির গুমুস্তগীনের সাথে অংশীদারিত্ব করে কাজ করেন। ১০৬৬ সালে তিনি বে নূর পাহাড়ে অভিযান চালায় এবং ১৬৭ সালে তিনি কায়সেরি এবং কিলিকিয়াকে জয় করেন। মহান সেলজুক সুলতান আলপ আর্সলান যখন আফসিন বে-এর এই বিজয় এবং বিজয়ের কথা শুনেছিলেন, তখন তিনি খুব খুশি হন এবং তাঁর যুদ্ধের জন্য তাকে অভিনন্দন জানান।
 
এরপরে আফশিন বে জর্জিয়ান অঞ্চলে অভিযান চালায়। ১০৭০ সালে আফশিন বে তার সৈন্যদের সাথে আরেকটি বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন। ঘটনার আকস্মিক মোড়ের মধ্যে, একজন সেলজুক কমান্ডার আফশিনের ভাইকে হত্যা করে এবং আফশিন তাকে প্রতিশোধের জন্য হত্যা করে। এটি আফশিনকে চিন্তিত করে তোলে এবং সে আনাতোলিয়ায় পালিয়ে যায় এবং পথিমধ্যে অনেক এলাকা জয় করতে থাকেন। এদিকে তিনি আলেপ্পোর মিরদাসিদ আমির এবং ইবনে খানের সাথে একরকম সম্পর্ক স্থাপন করেন তারপর তার শক্তি আরো বৃদ্ধি হয়। কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আল্প আরসালান কতৃক ক্ষমা পাওয়ার পরে খবরে তাদের মধ্যে আবার সন্ধি হয় এবং পরবর্তীতে বিজিত এলাকাগুলো আল্প আরসালানকে দিয়ে দেন। 
 
১০৭১ সালে মান্টজিকার্টের যুদ্ধের সময়ে তিনি আল্প আরলানের সেনাপতি হিসাবে কাজ করেছিলেন এবং তিনি এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১০৭৭ বা ১০৭৮ খ্রিস্টাব্দে, মালিক শাহ প্রথম আফশিন বে সহ বেশ কয়েকজন সেনাপতিকে তার ভাই তুতুশের নেতৃত্বে স্থানান্তরিত করেন। বিদ্রোহ দমন করতে আফশিনকে আলেপ্পোতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে মতবিরোধ ঘটে এবং আফসিন নিখোঁজ হন অনেকে বলে তিনি আবার পালিয়ে যান।
 
দিরিলিস আরতুগরুল টিভি সিরিজে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং আমরা তাকে আনাতোলিয়ান সেলজুক রাজবংশের গুপ্তচর হিসাবে কাজ করতে দেখি। এমনকি তিনি শাহজাদা নুমান ও তার মেয়ে হালিমা সুলতান এবং শাহজাদা ইগিতের নজর রাখার জন্য কায়ী উপজাতির গোপনে প্রবেশ করেন। পরে তিনি সেলজুকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার প্রচেষ্টার জন্য (আলেপ্পোর আইয়ুবিদের পক্ষ থেকে উত্সাহের কারণে) শাহজাদা নোমানকে হত্যা করেন।

দিরিলিস আরতুগ্রুলে আফসিন বে চরিত্রে অভিনয় করা তুরগুত টুনসাল্প ২০১৩ ও ২০১৪ সালে প্রচারিত টিভি সিরিজ মেরহামেটে মস্কোফ রেসেপ নামে একজন মদ্যপ এবং অর্থ-ক্ষুধার্ত বাবার ভূমিকার জন্য ব্যাপক পরিচিত জন্ম তারিখঃ ১২ মে, ১৯৭৬ জন্মস্থানঃ আদাপাজারি, সাকারিয়া, তুরস্ক। পেশাঃ চাকরি, সিনেমা, টিভি ও থিয়েটার অভিনেতা। উচ্চতা ৫ ফিট ১০ ইঞ্চি।